লালনগীতি
গান:দাসের যোগ্য নই চরনে
শিল্পী:দূর্গা দাস
লেখক:লালন সাইজি

১৮-১৯ শতকের দিকে নদিয়া জেলার অধিনের কুষ্টিয়াতে বাউল সম্রাট লালন সাইজি বাস করতেন।উনার সম্পর্কে ইতিহাসে স্পষ্ট কোন ধারনা পাওয়া যায়না।তবে উনার গানের থেকে অনুমান করে একটা ইতিহাস দাড় করানো হয়।আর সেগুলার উপর ভিত্তি করেই তার পরিচিতি সম্পর্কে জানা যায়।

লালন সাইজি ছোট বেলাতে পক্সজ্বরে আক্রান্ত হয়।যার চিকিৎসা ওই সময়ে ছিলোনা।তার পরিবার উপায় না পেয়ে নদীতে ভেলায় ভাসিয়ে দেয়।ভাসতে ভাসতে যখন নদীর কিনারাতে আসেন তখন মলমশাহ নামের এক ব্যাক্তি তাকে উদ্ধার করে।এবং সেবা যত্ন করে সুস্থ করে তোলে।

লালন সাইজির বাউল জীবনের শুুরু হয় সিরাজ সাই নামের এক বাউল সাধকের হাত ধরে।গুরু দিক্ষা শেষ করে বাউল সাধনা করার জন্য কুষ্টিয়ার হেওড়িয়াতে আশ্রম করেন।যা তৎকালিন সময়ে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাপ-দাদাদের জমিদারির অধিনস্ত ছিলো।
সেখানেই লালন সাইজি তার কিছু অনুরাগি নিয়ে বাউল সাধনা,দেহত্ব সাধনা,মানব সাধনা করতেন।এবং এই তত্বগুলা নিয়ে যে গান তিনি রচনা করতেন সেই গান তিনি এবং তিনার অন্যান্য শিষ্যরা গ্রাম বাজারে গেয়ে বেড়াতেন।এবং এই গানের মাধ্যমেই লালন সাইজির পরিচিতি বাড়তেই থাকে।

যেহেতু লালন সাইজির গানগুলা লেখা হতো দেহতত্ব সাধনার উপর ভিত্তি করে সেহেতু এখানে কোন নির্দিষ্ট ধর্ম মানা হতো না।অনেক কথা আবার ধর্মের সাথে সাংঘার্ষিক ও হতো।ধর্মই ছিলো মুল নিতি।তার গান শুনে সে সময়ের হিন্দু পুরোহিত এবং মসজিদের ইমাম সাহেবগন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে প্রতিবাদ করতেন।এই কারনে লালন বাউলদের পথ চলাটা খুব একটা সহজ হতোনা।

জমিদারের কাজে দেবেন্দ্রনাথ কুষ্টিয়াতে আসলে লালন সাইজির সাথে সাক্ষাৎ হয়।যেহেতু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরদের পরিবারে সাহিত্য চর্চা করা হতো সেকারনে লালনের প্রতি তাদের আলাদা কৌতুহল ছিলো।ওই সময়ে জমিদার বাড়ির বজরাতে বসে লালন সাইজির একমাত্র ছবিটা আকেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।যে ছবিটা থেকেই আমরা লালন সাইজির চেহারার কিছুটা ধারনা পায়।

লালন সাইজি তার জীবনদশায় অনেক গান লিখে গেছেন।যা মানুষের মুখে এখনো ঘোরে।ষোনা লালন সাইজির মৃত্যুর দিন তিনি সারাদিন শুধু গান গেয়েছেন।মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুখ থেকে গান সরেনি।একশো বছরের বেশী সময় তিনি জীবিত ছিলেন।তিনার মৃত্যুর পরে কুস্টিয়াতে তার আশ্রমেই তাকে সমাদীত করা হয়।যেটা বর্তমান লালন আকড়া নামেই পরিচিত।
প্রতিবছর এখানে তার ভক্ত অনুরাগিরা উৎসব পালন করতে আসে এখনো।এখনো সাইজির গানে মুখরিত হয়ে থাকে সাইজির আশ্রম।

свернуть