মহাশক্তিশালী সম্বুদ্ধে গাথাঃ

( গাথাটি শুনে দেখুন।আশাকরি পালি উচ্চারণের ভুল-ত্রুটিগুলো ঠিক হয়ে যাবে।)

পরম পূজনীয় শ্রদ্ধেয় কল্যাণমিত্র গুরুভন্তের লিখিত পঞ্চগুণো অনন্ত বন্দনা বইটিতে সম্বুদ্ধে ও সীরস্মীং গাথা দুইটি লিখিত রয়েছে। এ গাথা দুটি আর্যবিদ্যাধরগণ, সিদ্ধি ও মহাসিদ্ধি প্রাপ্ত জ্ঞানী মহাপুরুষগণ, ত্রিরত্নের শ্রদ্ধা সম্পন্ন সম্যক দেবগণ, পৃথিবী রক্ষক দেবগণ সহ প্রভূতি মহাশক্তি সম্পন্ন বহু দেবতার নিকট স্বীকৃতি প্রাপ্ত মহামূল্যবান গুণ সম্পন্ন গাথা। এ গাথা পাঠ ও পুঁথি ভাবনা করলে বিভিন্ন প্রকার সিদ্ধি, ঋদ্ধি, বিবিধ জ্ঞান, বিদ্যা ও অভিজ্ঞান সম্পন্ন হওয়া যায় এবং বিভিন্ন সিদ্ধি প্রাপ্ত জ্ঞানী মহাপুরুষগণ, মহা ঋদ্ধি সম্পন্ন আর্যবিদ্যাধর ও দেবগণ, বুদ্ধ শাসন রক্ষাকারী প্রভূতি দেবগণের নিকট থেকে সন্তানের ন্যায় মৈত্রী ভালবাসা প্রাপ্ত হয়ে আপদে-বিপদে সাহায্য-সহযোগিতা লাভ করে থাকে।

“বিজ্জাধর সম্বুদ্ধে গাথা”

সম্বুদ্ধে অটঠবীসঞ্চ, দ্বাদসঞ্চ সহসসাকে
পঞ্চসত সহসসানি, নমামি সীরসামহং
অপ্পকা বালুকা গঙ্গা, অনন্তা নিব্বুতা জিনা
তেসং ধম্মঞ্চ সংঘঞ্চ, আদরেন নমামহং
নমক্কারানুভাবেন হিত্বা সব্বে উপদ্দবে
অনেক অন্তরায়াপি বিনাসসন্তু অসেসতো।

#গাথার অনুবাদঃ জগতের মধ্যে অনন্ত গুণের অধিকারী সর্বজ্ঞতা প্রাপ্ত ৫১২০২৮ জন সম্যক সম্বুদ্ধগণকে নতশিরে সশ্রদ্ধ চিত্তে বন্দনা জ্ঞাপন করছি। গঙ্গা নদীর বালুকারাশির চেয়ে অধিক সম্যক সম্বুদ্ধ পৃথিবীর মধ্যে উৎপন্ন হয়ে পরিনির্বাপিত হয়েছেন। সেই নয়টি গুণসহ অনন্ত অনন্ত গুণের অধিকারী ভগবান বুদ্ধকে সহ ঊনার আবিষ্কৃত নির্বাণ প্রদায়ী লোকোত্তর ধর্ম ও সুপ্পটিপন্নো ভিক্ষু সংঘকে নমস্কার করছি। এ শ্রদ্ধা চিত্তে বন্দনা জ্ঞাপন করার অনুভবের ফলে সকল প্রকার অন্তরায়-উপদ্রব সম্পূর্ণরূপে বিনাশ প্রাপ্ত হোক।
সম্বুদ্ধে গাথার অনুভবের শক্তি ৫ প্রকার গুণে পরিপূর্ণ রয়েছে-
১। আদেশ গুণ
২। সিদ্ধিময় গুণ
৩। মহাসিদ্ধিময় গুণ
৪। প্রজ্ঞাময় গুণ
৫। লাভ-সৎকার লাভের গুণ

এ গাথার গুণের দ্বারা যে কোন প্রকারের অন্তরায়, বাধা বিপত্তি, বুদ্ধ শাসনের বিপরীত অবরুদ্ধক মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন দেবতা, ভূত-প্রেত-যক্ষ-নাগ-গন্ধর্ব প্রভূতি ৯৯ প্রকারের অদৃশ্য ব্যক্তিবর্গ এবং ৮০ প্রকারের নিম্ন মন্ত্রের প্রভাবে যাদু-বান-টোনা-চালানের অপশক্তি-অপপ্রয়োগ ইত্যাদিকে বিদ্যুতের ন্যায়-আকাশের আলো চমকানোর ন্যায় দ্রুত গতিতে বিনাশ ও ধ্বংস করতে সক্ষম। একটি ধারালো তলোয়ারকে যেমন প্রতিনিয়ত ঘর্ষণ করলে ধারালো থেকে আরও তীক্ষ্ণ ধারালোতে পরিণত হয় তদ্রুপ আমরা যদি শ্রদ্ধা-বিশ্বাসের সহিত গাথাটি প্রতিদিন চর্চা করি তাহলে সকল প্রকার অন্তরায়মুক্ত, বাধামুক্ত, শত্রুমুক্ত, ভয়মুক্ত সুন্দর ও সুখী জীবন যাপন করতে সক্ষম হব।

#উপাখ্যানঃ প্রতিরূপ দেশ বার্মায় জাপানের শাসনকালীন একটি ঘটনা। তখন বার্মার অধিবাসীদেরকে নির্দোষী হয়েও দোষী সাজিয়ে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হতো। এমন একজন অসহায়, নিরীহ ও সহজ-সরল লোককে ধরে এনে হাজতে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল। সে সময় মামার জোড় বা টাকার জোড় বলতে কিছু ছিল না। বার্মাদেশে সম্বুদ্ধে গাথা সম্পর্কে জানে না যে এমন কেউ নেই। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলেই এই গাথাটি জানতো। লোকটির আর কোন উপায় ছিল না। তাই সে সম্বুদ্ধে গাথা অধিষ্ঠান করে এক হাজার বার পাঠ করতে শুরু করলেন। যখন এক হাজার বার পাঠ করা শেষ করল, তখন সে সময়টা ছিল গভীর রাত্রি। তার হাজতের তালাটি আপনা-আপনিই খুলে গেল। সে আশ্চর্য্য হয়ে গেল। এমন সুযোগ পেয়ে, হাত ছাড়া না করে সে ভয়ে ভয়ে হাজত থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিল।

লিখেছেন - উ ওয়ান্নিতা পঞঞা থের (সচ্চ ম্যাগাজিন- সংখ্যা ৫)

Like comment and share this video with your friends. Please don't forget to subscribe to my channel :)

Thank You :)

свернуть