মহারাজ নন্দকুমার রচিত এই গান গাইবার অনুরোধ পেয়েছি অনেকদিন হল। গাইব গাইব করে গাওয়া হয়ে ওঠেনি এতদিন। এই গানটি শ্রীরামকৃষ্ণদেবের প্রিয় গানগুলোর একটি। তিনি গাইতেন এই গান।
ভুবন ভুলাইলি মা, হরমোহিনী।
মূলাধারে মহোৎপলে, বীণাবাদ্য-বিনোদিনী ৷৷
আধারে ভৈরবাকার, ষড়্দলে শ্রীরাগ আর,
মণিপুরেতে মল্লার, বসন্তে হৃদপ্রকাশিনী ৷৷
বিশুদ্ধ হিন্দোল সুরে, কর্ণাটক আজ্ঞাপুরে।
তান-লয়-মান-সুরে ত্রিসপ্ত-সুরভেদিনী ৷৷
মহামায়া মোহপাশে বদ্ধ কর আনায়াসে।
তত্ত্ব লয়ে তত্ত্বাকাশে স্থির আছে সৌদামিনী ৷৷
শ্রীনন্দকুমারে কয়, তত্ত্ব না নিশ্চয় হয়।
তব তত্ত্ব গুণত্রয় কাকীমুখ-আচ্ছাদনী ৷৷
(শরীর শারীর যন্ত্রে সুষুম্নাদি ত্রয় তন্ত্রে,
গুণভেদ মহামন্ত্রে গুণত্রয়বিভাগিনী ৷৷)
বন্ধনীর মধ্যে আবদ্ধ অংশটিও সঞ্চারীতে থাকে। ‘সাধন সঙ্গীত’এ (স্বরলিপি গ্রন্থ) ওই অংশটুকু নেই। তাই আমিও গাইনি। শেষ লাইনের ‘আচ্ছাদিনী’- উপরোক্ত গ্রন্থে ‘আচ্ছাদনী’।
মহারাজ নন্দকুমারের ফাঁসি তদানীন্তন বঙ্গে একটি অন্যতম আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। মহারাজ নন্দকুমারের পরিচয় তাঁর অপর গানে আগে উল্লেখ করেছি। বীরভূমের ভদ্রপুর গ্রামে তিনি গুহ্যকালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। উইকিপিডিয়া থেকে বিবরণ দিচ্ছি – ‘গুহ্যকালীবিগ্রহ কাশীর রাজা চৈত সিংহের সম্পত্তি ছিল যা ভারতের গভর্নর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীকালে মহারাজ নন্দকুমার এই বিগ্রহকে ভদ্রপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন। কষ্টিপাথরে নির্মিত চার ফুট উচ্চ বিগ্রহটি দেড় ফুট উচ্চ বেদীতে প্রতিষ্ঠিত। সর্পকুণ্ডলীর ওপরে যোগমুদ্রায় উপবিষ্টা ত্রিনয়নী দ্বিভূজা লোলজিহ্বা দেবীমূর্তি সর্পালঙ্কারে ভূষিতা। ডান হাতে বর ও বামহাতে অভয়মুদ্রা। গলায় পঞ্চাশটি নরমুন্ডের মালা। চোখ এবং দাঁত মহাশঙ্খ দ্বারা নির্মিত’।
গানের ভিডিওতে গুহ্যকালী বিগ্রহ ও মন্দিরের ছবি দেয়া হল।
![](https://i.ytimg.com/vi/vBreT6wgBFU/maxresdefault.jpg)